বৃহস্পতিবার । ২০শে নভেম্বর, ২০২৫ । ৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২
পানি কমিশনের সভায় উঠছে ৪৯ কোটি টাকার প্রকল্প

ভাগ্য বিড়ম্বনার জট খোলার অপেক্ষায় ডুমুরিয়া-ফুলতলার ৬ লাখ পানিবন্দি

নিজস্ব প্রতিবেদক

খুলনার ডুমুরিয়া-ফুলতলার বানভাসি মানুষের কান্না দূরীকরণে সুখবর আসতে পারে আজ। আজ বৃহস্পতিবার “খুলনা জেলার ডুমুরিয়া ও বটিয়াঘাটা উপজেলায় শোলমারী নদীর সাথে সম্পর্কিত বিল ও আবাসিক এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসন” প্রকল্প পানি কমিশনের সভায় উত্থাপনের সম্ভাবনা রয়েছে। পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন (ইআইএ) সার্টিফিকেট না থাকায় ইতোপূর্বে প্রকল্পটি ফেরত পাঠায় পরিকল্পনা কমিশন। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ডুমুরিয়া-ফুলতলার জলাবদ্ধতা নিরসন হবে। সেইসঙ্গে ভাগ্য বিড়ম্বনার জট খুলবে এই এলাকার ৬ লাখ মানুষের।

অতিবৃষ্টিতে দুবছরে দু’উপজেলার ভেসে গেছে ছোট বড় ২৪ হাজার মৎস্য ঘের। এতে প্রায় ২৬৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ধান ও সবজির ক্ষতি হয়েছে প্রায় ২০ কোটি টাকার। জলাবদ্ধতা দূর করতে গেল বছর তড়িঘড়ি করে পানি উন্নয়ন বোর্ড ৪৯ কোটি টাকার “খুলনা জেলার ডুমুরিয়া ও বটিয়াঘাটা উপজেলায় শোলমারী নদীর সাথে সম্পর্কিত বিল ও আবাসিক এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসন” প্রকল্প গ্রহণ করে। পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন (ইআইএ) প্রত্যায়ন না দেওয়ায় ওই প্রস্তাবিত প্রকল্পটি ফেরত দেয় পরিকল্পনা কমিশন। তবে চলতি বছর প্রত্যায়নসহ আবারও প্রকল্পটি পাঠানো হয়েছে। আজ পানি কমিশনের সভায় এ প্রকল্পের ইতিবাচক আলোচনা হলে দূর হতে পারে জলাবদ্ধতা।

উল্লিখিত প্রকল্পে ভরাট লোয়ার শোলমারী নদীর সাড়ে ১২ কিলোমিটার এবং আপার শোলমারী নদীর ২.৮ কিলোমিটার নদী খনন। ঠাকুমারী খাল, রামদিয়া খাল, সিদুরতলা খাল, ঘোলা খাল, ঘোলা শাখা খাল, সিদুরখালী শাখা খাল, জোড়াবটতলা খাল, খড়িয়া খাল ও ঠিকাদারপাড়া খাল খনন, শোলমারী রেগুলেটরে ৩টি এবং রামদিয়া রেগুলেটরে ২টি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন সাবমারসিবল পাম্প স্থাপন। খননের প্রস্তাবিত ৯ টি খালের দৈর্ঘ্য ২১ কিলোমিটার।

প্রকল্পটি গ্রহণ করার পরে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব আব্দুল্লাহ আল আরিফ শোলমারী এলাকা পরিদর্শন করেন। পরে তিনি ডুমুরিয়ায় গণশুনানিতে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন। ডুমুরিয়া উপজেলা পরিষদের সম্প্রসারিত ভবনের সম্মেলন কক্ষে এলাকার রাজনৈতিক নেতা, জনপ্রতিনিধি, সুশীল সমাজ ও গণমাধ্যম কর্মীদের এ গণশুনানিতে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আল-আমিন। ওই শুনানিতে সকল বক্তাই প্রকল্পটি দ্রুত গ্রহণপূর্বক তড়িৎ কার্যক্রম শুরু করার পক্ষে মতামত পেশ করেন। কিন্তু গেল দু’বছর ধরে প্রকল্পটি পাস না হওয়ায় ৬ লাখ পানিবন্দি মানুষ ভাগ্য বিড়ম্বনায় পড়েছেন। দু’উপজেলার ছোটবড় ৩০ বিল প্লাবিত হয়েছে। ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে দু’বছর মাছ ও সবজি হয়নি।

এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জল কুমার সেন বলেন, “আশা করছি প্রকল্পটি এবার অনুমোদন হবে।”

এসডি আতিকুর রহমান বলেন, “আজ বৃহস্পতিবার পানি কমিশনের সভায় প্রকল্পটি উত্থাপন হতে পারে।”

পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক(পরিবেশগত ছাড়পত্র) মাসুদ ইকবাল মোঃ শামীম বলেন, “প্রকল্পটিতে (ইআইএ) না থাকায় আবারও সার্ভে করার জন্য খুলনায় পাঠানো হয়েছিল। গত ২৭ অক্টোবর ইআইএ সহ আবারও প্রকল্পটি আমাদের কাছে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। দ্রুত সমাধান হবে।”

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন